ভিটামিন ডি আমরা পাই সূর্যের আলো থেকে। এটা কমবেশি সবাই জানে। আমি ভেবে অবাক হই, এই নারীরা বোরকা, হিজাব, নেকাব, হাত মোজা, পা মোজা আরো হাবিজাবি কত কিছু পরে তাদের শরীরে কি ভিটামিন ডি এর প্রয়োজন পড়েনা? ধর্মীয় বিধান পালন করায় স্রষ্টা কি খুশি হয়ে তাদের শরীরে স্বয়ংক্রিয়ভাবেই ভিটামিন ডি তৈরী করে দেন?
ভিটামিন ডি তৈরীর জন্য সূর্যের আলোর প্রয়োজন পড়বে এটাও তো মহান স্রষ্টারই পরিকল্পনা। তাহলে একজন প্রাক্টিসিং ধার্মিক নারী আগামাথা পোশাক পরিহিত অবস্থায় কিভাবে তার ভিটামিন ডি এর অভাব পূরণ করবে? ভিটামিন ডি এর অভাবজনিত কারণে রোগাক্রান্ত হয়ে পড়লে ইহুদী নাসারাদের আবিষ্কৃত সাপ্লিমেন্ট খেয়েই তো অভাব পূরণ করা লাগবে।
পরম করুণাময় ইচ্ছা করলেই নারীদের শরীরে ভিটামিন ডি তৈরীর জন্য কোন স্পেশাল অঙ্গ দিয়ে দিতে পারতেন। অথবা এমন ব্যবস্থা করে দিতে পারতেন যাতে তাদের শরীরে এটার প্রয়োজনই না পড়ে। যেহেতু তিনি নারীদের সর্বাঙ্গ ঢেকে রাখা বাধ্যতামূলক করে নারীদের ভিটামিন ডি এর উৎস বন্ধ করে দিয়েছেন সেহেতু পবিত্র ধর্মগ্রন্থে কৃত্রিম ভিটামিন ডি তৈরীর ফর্মুলা নিশ্চয়ই আছে। কিন্তু পবিত্র গ্রন্থ তন্ন তন্ন করে সার্চ করে, রিসার্চ করেও রুহানী বিজ্ঞানীরা কেউ এটা খুঁজে কেন পাচ্ছেনা এটাই রহস্য।
ভিটামিন ডি রক্তে ক্যালসিয়াম এর পরিমাণ নিয়ন্ত্রণ করে। যা সুস্থ সবল হাড়ের জন্য অপরিহার্য। ভিটামিন ডি এর অভাবে হাড়ের সমস্যা, কার্ডিওভাস্কুলার রোগ, অস্টিওপরোসিস, রিকেটের মত ভয়ংকর রোগ হতে পারে। এছাড়াও টাইপ ওয়ান ডায়াবেটিস, বিশেষ ধরণের বাত এবং বিভিন্ন ধরণের ক্যান্সারের ঝুঁকি বৃদ্ধি করে। ভিটামিন ডি অভাবগ্রস্থ মায়েদের সন্তানদের হৃদরোগের ঝুঁকিও বেশি থাকে। ইউকে তে বাচ্চাদের রিকেট বেড়ে যাওয়ার পেছনে বিশাল ধার্মিক (একটি নির্দিষ্ট ধর্মের) জনগোষ্ঠীর নারীদের পোশাককেই দায়ী করা হচ্ছে।
সেই বিশেষ ধার্মিক সংখ্যাগরিষ্ঠ দেশগুলোতে ভিটামিন ডি ডেফিশিন্সি বেশিমাত্রায় লক্ষ্যণীয়। কারণটা আর নতুন করে বলার কিছু নাই। মুসলিমপ্রধান অনেকগুলো দেশ থেকে আমেরিকায় আসা নারীদের রক্তের নমুনা পরীক্ষা করে ভিটামিন ডি এর লেভেল স্বাভাবিকের তুলনায় অনেক কম পাওয়া গিয়েছে। সৌদি আরবে ৫২ জন নারীর উপর চালানো একটি পরীক্ষায় প্রত্যেকের রক্তেই ভিটামিন ডি এর পরিমাণ নির্দিষ্ট মাত্রার চেয়ে অনেক কম ছিল। মুসলিমপ্রধান দেশ জর্ডানে একটি স্টাডিতে সর্বাঙ্গ আবৃত ৮৩.৩% মহিলারই শরীরে ভিটামিন ডি এর ঘাটতি পাওয়া গিয়েছে।
ইসলামিস্টরা পর্দাপ্রথার গুরুত্ব বর্ণনা করতে গিয়ে মাঝেমধ্যেই বলে থাকেন বোরকা নাকি বিভিন্ন UV রেডিয়েশন থেকে রক্ষা করে। কিন্তু বিভিন্ন গবেষণায় দেখা গেছে UV রেডিয়েশনের তুলনায় অনেক বেশি নারী মারা যাচ্ছে সূর্যালোকের অভাবজনিত কারণে। যেহেতু একজন প্রাক্টিসিং ধার্মিক নারীর পোশাক নির্বাচনের স্বাধীনতা থাকেনা, তারা বছরের সব ঋতুতে সব সময় সর্বাঙ্গ ঢাকা পোশাক পরতে বাধ্য হয়। কিন্তু কোন কুসংস্কারমুক্ত নারী তার পোশাক নির্বাচনে স্বাধীন থাকে। ভিটামিন ডি তৈরীর জন্য UV-B রশ্মির প্রয়োজন হয়। যার প্রধান উৎস হল সূর্যালোক।
ধর্ম পালন করতে গিয়ে রোগে শোকে ভুগে মারা গেলে নারীদের জন্য কিন্তু কোন এক্সট্রা অফারও নাই। তাই নিজে সুস্থ থাকতে, পরবর্তী প্রজন্মকে সুস্থ রাখতে নারীদেরকে অবশ্যই সতর্ক হতে হবে।
© নাফিস সাদিক শাতিল
© Nafis Sadique Shatil
মন্তব্যসমূহ
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন