প্যারা-লাল (নন্দলাল প্যারোডি)



প্যারাডক্সিকাল সাজিদ একদা করিল ভীষণ পণ-

ধর্মের তরে, যে করেই হোক, রাখিবেই সে জীবন।

সকলে বলিল, ‘আহা হা কর কি, কর কি, সাজিদ ভাই’ ?

সাজিদ বলিল, ‘বাংলার বুকে না--স্তিক ঠাঁই নাই।

আমি না করিলে কে করিবে আর উদ্ধার এই ধর্ম ?’

তখন সকলে বলিল- ‘বাহবা, এটাতো মহৎ কর্ম !’


সাজিদের ভাই করোনায় মরে, দেখিবে তাহারে কেবা !

সকলে বলিল, ‘যাও না সাজিদ, করো না ভায়ের সেবা।’

সাজিদ বলিল, ‘ভায়ের জন্য জীবনটা যদি দিই-

না হয় দিলাম, -কিন্তু অভাগা ধর্মের হইবে কি ?

বাঁচাটা আমার অতি দরকার, ভেবে দেখো চারিদিক।’

তখন সকলে বলিল- ‘হাঁ হাঁ হাঁ, তা বটে, তা বটে, ঠিক !’


সাজিদ একদা ফেসবুক খুলিয়া পোস্ট করিল জোশে,

মিথ্যাচার আর ফ্যালাসি দেখিয়া দন্ত পড়িলো খসে;

পড়িলো ধন্য ধর্মের জন্য সাজিদ খাটিয়া খুন;

লেখে যতো তার দ্বিগুণ গাইলায়, লানত দেয় দশ গুণ;

খাইতে ধরিল কালোজিরা, মধু, খেজুর থাল থাল,

তখন সকলে বলিল- ‘বাহবা, ভালোই ছিড়ছো বা*ল।’


সাজিদ একদা টুইটারে এক নাস্তিককে দেয় গালি;

নাস্তিক আসিয়া যুক্তি টানিয়া চাপিয়া ধরিল খালি;

সাজিদ বলিল, “আ-হা-হা ! কর কি, কর কি ! ছাড় না ছাই,

কি হবে আমার, যুক্তি টানিলে, ধান্দা যে মারা খায়;

বলো ক’বিঘৎ নাকে দিব খত যা বলো করিব তাহা”

তখন সকলে বলিল- “বাহবা বাহবা বাহবা বাহা !”


ফেসবুক থেকে হ’ত না বাহির, হাদিস-শেয়ার খালি;

প্রাতরাশ শেষে ফেবুতে এসে নাস্তিকদের দেয় গালি।

অবিশ্বাসীর প্রোফাইলে গিয়া সাজিদ পাতিতো ঘাঁটি,

ভিন্নমতের পোস্ট দেখিয়াই বাঁধিয়া ফেলিতো আটি।

তাই শুয়ে বসে, হৃদয়ে পুষছে যত ক্ষোভ আর রাগ,

সকলে বলিল- ‘ভ্যালারে সাজিদ, ভাগ রে এবার ভাগ।’


[দ্বিজেন্দ্রলাল রায়ের 'নন্দলাল' কবিতা অবলম্বনে।]


Nafis Sadique Shatil

নাফিস সাদিক শাতিল

মন্তব্যসমূহ