প্যারাডক্সিকাল সাজিদ একদা করিল ভীষণ পণ-
ধর্মের তরে, যে করেই হোক, রাখিবেই সে জীবন।
সকলে বলিল, ‘আহা হা কর কি, কর কি, সাজিদ ভাই’ ?
সাজিদ বলিল, ‘বাংলার বুকে না--স্তিক ঠাঁই নাই।
আমি না করিলে কে করিবে আর উদ্ধার এই ধর্ম ?’
তখন সকলে বলিল- ‘বাহবা, এটাতো মহৎ কর্ম !’
সাজিদের ভাই করোনায় মরে, দেখিবে তাহারে কেবা !
সকলে বলিল, ‘যাও না সাজিদ, করো না ভায়ের সেবা।’
সাজিদ বলিল, ‘ভায়ের জন্য জীবনটা যদি দিই-
না হয় দিলাম, -কিন্তু অভাগা ধর্মের হইবে কি ?
বাঁচাটা আমার অতি দরকার, ভেবে দেখো চারিদিক।’
তখন সকলে বলিল- ‘হাঁ হাঁ হাঁ, তা বটে, তা বটে, ঠিক !’
সাজিদ একদা ফেসবুক খুলিয়া পোস্ট করিল জোশে,
মিথ্যাচার আর ফ্যালাসি দেখিয়া দন্ত পড়িলো খসে;
পড়িলো ধন্য ধর্মের জন্য সাজিদ খাটিয়া খুন;
লেখে যতো তার দ্বিগুণ গাইলায়, লানত দেয় দশ গুণ;
খাইতে ধরিল কালোজিরা, মধু, খেজুর থাল থাল,
তখন সকলে বলিল- ‘বাহবা, ভালোই ছিড়ছো বা*ল।’
সাজিদ একদা টুইটারে এক নাস্তিককে দেয় গালি;
নাস্তিক আসিয়া যুক্তি টানিয়া চাপিয়া ধরিল খালি;
সাজিদ বলিল, “আ-হা-হা ! কর কি, কর কি ! ছাড় না ছাই,
কি হবে আমার, যুক্তি টানিলে, ধান্দা যে মারা খায়;
বলো ক’বিঘৎ নাকে দিব খত যা বলো করিব তাহা”
তখন সকলে বলিল- “বাহবা বাহবা বাহবা বাহা !”
ফেসবুক থেকে হ’ত না বাহির, হাদিস-শেয়ার খালি;
প্রাতরাশ শেষে ফেবুতে এসে নাস্তিকদের দেয় গালি।
অবিশ্বাসীর প্রোফাইলে গিয়া সাজিদ পাতিতো ঘাঁটি,
ভিন্নমতের পোস্ট দেখিয়াই বাঁধিয়া ফেলিতো আটি।
তাই শুয়ে বসে, হৃদয়ে পুষছে যত ক্ষোভ আর রাগ,
সকলে বলিল- ‘ভ্যালারে সাজিদ, ভাগ রে এবার ভাগ।’
[দ্বিজেন্দ্রলাল রায়ের 'নন্দলাল' কবিতা অবলম্বনে।]
Nafis Sadique Shatil
নাফিস সাদিক শাতিল
মন্তব্যসমূহ
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন