বাংলাদেশী মোল্লাদের ভন্ডামী: পর্ব ২



হুজুর আহমাদুল্লাহ বিভিন্ন সময় বৃষ্টি নামানোর জন্য ইসতিসকার নামাজ পড়িয়েছেন। কখনো ফান্ড কালেকশন করে ক্লাউড সিডিং এর মাধ্যমে বৃষ্টি নামানোর লাইনে যাননি। কিন্তু এবারের বন্যায় তিনি কোরান হাদিস ঘেটে কোন দ্বীনি শরীয়াভিত্তিক সমাধান না খুঁজে সরাসরি অর্থ সংগ্রহ করে বন্যাদূর্গত মানুষের সেবায় নিয়োজিত হয়েছেন। এতে মানুষের সাময়িক উপকার হচ্ছে ঠিকই। কিন্তু বন্যার্ত মানুষেরা চরম কষ্টে দিন কাটাচ্ছে। তিনি কি পারতেন না কোরান হাদিস রিসার্চ করে এই বন্যা পার্মানেন্টলি বন্ধ করার কোন ব্যবস্থা করতে? স্ত্রী সহবাস থেকে শুরু করে মহাবিশ্বের তাবৎ সমস্যার সমাধান যিনি কোরান হাদিসের আলোকে করে ফেলেন। তিনি হঠাৎ নিজে কেন কক্ষপথ বিচ্যুত হয়ে পড়লেন?


মহান আল্লাহ চাইলে কি না পারেন? তিনি চাইলেই নদীগুলোর গভীরতা বাড়িয়ে দিতে পারতেন। তিনি চাইলেই নদীর দিক পরিবর্তন করে এদিক সেদিক করে দিতে পারতেন। তিনি চাইলেই টেকটোনিক প্লেটগুলো ধরে হালকা ঝাঁকি দিয়ে বাংলাদেশকে সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে আট দশ হাজার ফুট উঁচুতে তুলে দিতে পারতেন। তিনি চাইলেই  হিমালয়ের মতো আরেকটা পর্বতমালা তৈরী করে দিতে পারতেন। দোয়া কালাম আমল কিংবা নামাজের মাধ্যমে কি এই সামান্য কাজগুলোর কোনটাই করা সম্ভব ছিলোনা? রাতারাতি পানি নামিয়ে ফেলা সম্ভব ছিলোনা? মহান আল্লাহপাক তার এই মহান নেককার বান্দার উসিলায় কি এই সামান্য দোয়াও কবুল করবেন না?  তাহলে এই সহজ লাইন রেখে  আহমাদুল্লাহ কেন টাকা পয়সা সংগ্রহের দিকে ঝুঁকলেন? এর কয়েকটি কারণ হতে পারে।


১) তিনি ভালো করেই জানেন এসব ঝাঁড় ফুক দোয়া কালামে কোন কাজ হয়না। এজন্য এই পন্থায় যাননি। 

২) তিনি বৃষ্টি নামানোর জন্য ইসতিসকার নামাজ পড়েন আবহাওয়ার পূর্বাভাস দেখে। বন্যার ক্ষেত্রে আবহাওয়ার পূর্বাভাসে তেমন কিছুই আসছেনা দেখে তিনি ধরা খাওয়ার ভয়ে ঐ পথে আর পা বাড়াননি।

৩) তিনি জানেন যে পরিস্থিতি সৃষ্টিকর্তার নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে গিয়েছে। তাই স্রষ্টা চাইলেও বন্যা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ সম্ভব নয়। এই কারণে তিনি বন্যা নিয়ন্ত্রণের জন্য কোন তদবীর করেননি।

৪) মানুষ যতদিন দু:খ, কষ্ট, অভাব, রোগে শোকে কষ্ট পাবে ততদিনই ধর্ম ব্যবসা ভালোভাবে টিকে থাকবে। এই কারণে তিনি চাননি বন্যা পরিস্থিতির উন্নয়ন হোক। তাই তিনি কোন দোয়ার দরখাস্ত করেননি।

৫) এত এত টাকা ডোনেশন আসতে দেখে তিনি টাকার লোভ ছাড়তে পারেননি। বিনা পয়সায় বিজ্ঞাপন আর জনসংযোগের সুযোগ হাতছাড়া হওয়ার ভয়ে তিনি শরয়ীভিত্তিক সমাধানের চেষ্টাই করেননি। 


আপনাদের কী মনে হয়?


নাফিস সাদিক শাতিল

Nafis Sadique Shatil

মন্তব্যসমূহ