এক গ্লাস গরম দুধ খেতে খেতে ভাগ্নেকে বললাম, "গরুর দুধের যে দাম বেড়েছে, দুধ খাওয়াই ছেড়ে দিতে হবে মনে হচ্ছে।" ভাগ্নে বললো, "মামা, তুমি কি জানো গাভীর দুধ কোথা থেকে উৎপন্ন হয়?"
আমি বললাম, "জানবোনা কেন? দুধ তো তৈরী হয় ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র দুগ্ধগ্রন্থি থাকে। দুগ্ধগ্রন্থিগুলোতে দুগ্ধউৎপাদনকারী এ্যালভিওলাই থাকে। এই দুগ্ধগ্রন্থিগুলো একত্রিত হয়ে লোবিউল তৈরী করে। দুগ্ধগ্রন্থিগুলোর সাথে ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র নালি থাকে। এই সকল নালি একত্রিত হয়ে একটি বড় নালি তৈরি করে। এই নালি পথে দুগ্ধ প্রবাহিত হয়ে স্তনবৃন্তের মাধ্যমে নিঃসৃত হয়।"
"কিন্তু মামা পবিত্র কোরআনুল কারীমে সূরা আন নাহলের ৬৬ নাম্বার আয়াতে বলা হয়েছে চতুষ্পদ জন্তুর দুধ উৎপন্ন হয় তাদের পেটের ভেতর রক্ত ও গোবরের মধ্য থেকে। (১৬ঃ৬৬) এই আয়াতের ব্যাখ্যা করতে গিয়ে প্রখ্যাত সাহাবী সর্বকালের অন্যতম শ্রেষ্ঠ মুফাসসির আব্দুল্লাহ ইবনে আব্বাস(রাঃ) বলেন, 'জন্তুর ভক্ষিত ঘাস তার পাকস্থলীতে একত্রিত হলে পাকস্থলী তা সিদ্ধ করে। পাকস্থলীর এই ক্রিয়ার ফলে খাদ্যের বিষ্ঠা নীচে বসে যায় এবং দুধ উপরে থেকে যায়। দুধের উপরে থাকে রক্ত। এরপর যকৃত এই তিন প্রকার বস্তুকে পৃথকভাবে তাদের স্থানে ভাগ করে দেয়, রক্ত পৃথক করে রগের মধ্যে চালায় এবং দুধ পৃথক করে জন্তুর স্তনে পৌছে দেয়।'
ভাগ্নের কথা শুনে আমি হা হয়ে গেলাম। আমি অবাক হয়েছি বুঝতে পেরে ভাগ্নে পবিত্র কোরআন থেকে আয়াতটি তর্জমা করে শোনালো। এরপর বলা শুরু করলো, "এসব স্তনগ্রন্থি, দুগ্ধগ্রন্থি, এ্যালভিওলাই, লোবিউল থেকে দুধ উৎপাদনের ব্যাখ্যা বিজ্ঞানীরা আবিষ্কারের বহু আগেই পৃথিবীর সর্বশ্রেষ্ঠ কিতাবে নির্ভুলভাবে এর ব্যাখ্যা দেয়া আছে। একজন প্রকৃত মুমিন হিসাবে তুমি কোনটা গ্রহণ করবে সিদ্ধান্ত তোমার। তবে যেই বিষয়ে ইসলামের সুনির্দিষ্ট ব্যাখ্যা আছে, সেখানে বিজ্ঞানের ব্যাখ্যা গ্রহণ অবশ্যই উচিত হবেনা।"
ভাগ্নের বক্তব্য শুনে গোবর ও রক্তের মাঝ থেকে তৈরী দুধসহ গ্লাসটি মেঝেতে পড়ে গেলো।
Nafis Sadique Shatil
নাফিস সাদিক শাতিল
মন্তব্যসমূহ
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন